Prothom Rajdhani
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • স্থানীয়
  • অর্থ বাণিজ্য
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • লাইফ স্টাইল
  • অন্যান্য
    • চাকরি
    • শিক্ষা
    • রকমারি
    • শিল্প ও সাহিত্য
Prothom Rajdhani
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • স্থানীয়
  • অর্থ বাণিজ্য
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • লাইফ স্টাইল
  • অন্যান্য
    • চাকরি
    • শিক্ষা
    • রকমারি
    • শিল্প ও সাহিত্য
মুক্তমতহাইলাইট

কেমন আছে রুবেল?

দ্বারা Prothom Rajdhani ৩০ জুলাই, ২০২২
৩০ জুলাই, ২০২২ 855 দৃশ্যগুলি

বৈজয়ন্ত বিশ্বাস :

২০১৪/১৫ সালের ঘটনা। আমি তখন বরগুনার আমতলী উপজেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। (দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু উপজেলায় আদালত আছে। ওখানকার মানুষদের বিচার চাইতে জেলা শহরে যেতে হয় না।) একদিন সকালবেলা আদালতে ঢুকছি, হঠাৎ খেয়াল করে দেখি বারান্দায় নিরাপত্তা রক্ষীদের বেঞ্চে কালো মতন ৩/৪ বছর বয়সী একটি ছেলে বসে আছে। ভালো করে তাকালাম ছেলেটার দিকে। মায়াকাড়া মুখের বড় বড় গোল গোল চোখে করুণ দৃষ্টি। কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলে গেছে, চোখের কোণ বেয়ে গড়িয়ে পড়া অশ্রু শুকিয়ে দাগ হয়ে আছে। ছেলেটা একটা শুকনো পাউরুটি চিবানোর চেষ্টা করছে। খাস কামরায় ঢুকে সবাইকে ডাকলাম। জিজ্ঞাসা করলাম, ছেলেটা এখানে কেন? তার পরিচয় কি? আমার জিআরও জবাব দিল, “স্যার, ছেলেটার নাম রুবেল। গতকাল সুন্দরবন লঞ্চে ঢাকা থেকে আমতলী এসেছে। সাথে কেউ ছিল না। ওর বাড়ি কোথায় সেটাও জানা যায়নি। আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ ছেলেটাকে সেফ হোমে পাঠানোর আবেদন করেছে।” (এতিম শিশু ও মহিলাদের জন্য নির্মিত সরকারি আবাসনকে সেফ হোম বলে) আমি একজন মহিলা কনস্টেবলকে দায়িত্ব দিলাম ছেলেটাকে দেখভাল করার জন্য। সবাইকে বললাম, কোর্ট শেষ করার পরে ছেলেটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। বেলা ১:৩০ টার সময় থানার ওসিকে আমার চেম্বারে আসতে বলার জন্য জিআরওকে বলে দিলাম। আদালত শেষ করে চেম্বারে ঢুকতেই জিআরও বলল, “স্যার, ওসি সাহেব আপনার সাথে দেখা করার জন্য অনুমতি চাচ্ছেন।”
অফিসার ইনচার্জ স্যালুট দিয়ে আমার খাসকামরায় ঢুকলেন। তিনি যা বললেন তার সারবত্তা হচ্ছে ছেলেটির বাড়ি কোথায় সেটা তিনি অনেকভাবে চেষ্টা করেও উদ্ধার করতে পারেননি। যদিও তার চেষ্টা করার পদ্ধতি আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারল না।
আমি মনে মনে আমার কর্মপন্থা নির্ধারণ করে ফেললাম।
তদন্ত করার দায়িত্ব আমার না। পুলিশ সহ অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করে আমার সামনে সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে। তারপর সেটা দেখে আমি সঠিক সিদ্ধান্ত উপনীত হতে সচেষ্ট হই। ক্ষেত্র বিশেষে তদন্ত সঠিক না বেঠিক হয়েছে সে বিষয়েও পর্যালোচনা দিই। আজ ভাবলাম দেখি না নিজেই একটু তদন্ত করে। কারো ভালো করার জন্য না হয় নিজের জায়গা থেকে একটু সরে আসলাম! এখানে বলে রাখা ভালো ছাত্রজীবনে ইনভেস্টিগেশন বিষয়ে বিস্তর পড়াশোনা করার কারণে তদন্ত প্রক্রিয়া বিষয়ে ধারণা আমার আগে থেকেই ছিল।
লাঞ্চের জন্য বাংলোতে গেলাম। সাথে নিয়ে নিলাম ছেলেটাকে। ডাইনিং টেবিলে বসে আমি এবং আমার স্ত্রী ওকে আমাদের সাথে একাত্ম করার চেষ্টা করলাম। সফলও হলাম কিছুটা। রুবেল আড়ষ্টতা ঝেড়ে ফেলে অনেকটাই স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে লাগলো। আমাদের তখনো সন্তান হয়নি। আমার স্ত্রী পরম মমতায় রুবেলকে কোলে নিয়ে নিজের হাতে ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত মাখিয়ে খাইয়ে দিল। আমার চোখের কোনে অশ্রু চকচক করে উঠল। খাওয়া-দাওয়া শেষে ছেলেটাকে নিয়ে গুছিয়ে বসলাম। ওকে বললাম, “কি হয়েছে আমাকে সবকিছু খুলে বলো।” অনেকক্ষণ ধরে মনোযোগ দিয়ে ওর কথা শুনলাম।
ওর কথা থেকে জানতে পারলাম গতকাল ও ওর বাবার সাথে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিল। এজন্য ওরা সদরঘাটের লঞ্চঘাটে যায়। এরপর ভিড়ের মধ্যে ও হারিয়ে যায়। তারপর বাবাকে খুঁজতে খুঁজতে ভুল করে অন্য একটা লঞ্চে উঠে পড়ে।
এবার সবকিছু বুঝতে পারলাম। এই তাহলে ওর ঢাকা থেকে আমতলী আসার ইতিহাস। বলা বাহুল্য ওর বাড়ি কোথায় সেটা ও স্পষ্ট করে বলতে পারে না। তখন আমি কয়েকটা যুক্তিপূর্ণ হাইপোথিসিস দাঁড় করালাম।
১. ছেলেটার বাড়ি নদী অঞ্চলে যেখানে ঢাকা থেকে লঞ্চ যোগাযোগ আছে। কারণ সে বাড়ি যাবার জন্য বাবার সাথে সদরঘাটে গিয়েছিল।
২. ছেলেটা এখন পর্যন্ত স্কুলে ভর্তি হয়নি। তাই স্কুলের নাম ধরে তার ঠিকানা বের করার চেষ্টা বৃথা।
৩. ঢাকা থেকে বাংলাদেশের কোন কোন জেলাতে লঞ্চে যাওয়া যায় এর একটা তালিকা তৈরি করতে হবে।
৪. ছেলেটার বাড়ি সম্ভবত কুমিল্লা নোয়াখালী চাঁদপুর লক্ষীপুর অঞ্চলে। কারণ তার কথায় ওই এলাকার টান স্পষ্ট। এখানে উল্লেখ্য, ইউনিভার্সিটি লাইফে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে ঘুরে বেড়ানোর সুবাদে বা সেখানকার লোকজনের সাথে ওঠাবসা করার কারণে প্রত্যেক এলাকার মানুষের কথার টান আমি কমবেশি চিনি।
৫. বাংলাদেশের বড় একটা ম্যাপ লাগবে। ম্যাপের জায়গাগুলো দেখিয়ে নাম বলে ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করতে হবে এই জায়গা সে চিনে কিনা।
যেই কথা সেই কাজ। আমার স্টাফদের দিয়ে বাজার থেকে বড় একটা বাংলাদেশের ম্যাপ আনালাম। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (BIWTA) সাথে কথা বলে জেনে নিলাম ঢাকা থেকে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় লঞ্চ যোগাযোগ আছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে ধৈর্য ধারণ করে ম্যাপ ধরে ধরে একটার পর একটা জেলার নাম বলে যেতে থাকলাম আর জিজ্ঞাসা করতে লাগলাম সেখানে ওর বাড়ি কিনা। প্রায় আধা ঘন্টা চেষ্টার পরে হাল ছেড়ে দিলাম। কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলাম। মনের ভিতরে কি জানি একটা টিক টিক করছে। তড়াক করে উঠে বসলাম। এই বয়সী ছেলেরা সাধারণত বড় বড় স্থানের নাম বলতে পারে না, কিন্তু ছোট ছোট জায়গা ঠিকই চেনে। যেমন ও হয়তো জেলার নাম বলতে পারবে না, কিন্তু ওর গ্রাম বা ইউনিয়ন বা উপজেলার নাম বললে চিনতে পারে। আমি আবার নতুন উদ্যমে দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে কাজ শুরু করলাম। এবার উপজেলা, গ্রাম এবং ইউনিয়নের নাম বলতে লাগলাম। প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টার পরে আশার আলো দেখতে পেলাম। চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নাম বলতেই ও চিনতে পারল। আমি তখন উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছি। ভালোভাবে জিজ্ঞাসা করলাম, রুবেল, হাইমচর চিনো?
ও কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, হ, নাম হুনছি। আমার আব্বা ওইহানে মাঝেমইধ্যে যায়।
আমার বুকের গভীর থেকে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস উঠে আসলো। একটা হারিয়ে যাওয়া শিশুকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব – এ যে কত বড় অর্জন তা বলে বোঝানো যাবে না। আমি মনে মনে কল্পনা করতে লাগলাম সেই দৃশ্যটা যখন ওর বাবা-মা ওকে নিতে আসবে; ওর চোখের সেই অভিব্যক্তি; কুলহারা অসহায় একটা শিশু যখন আশার প্রদীপ দেখতে পায়! আহা রে! আর শুধু ওর কথা বলি কেন? ওর সন্তানহারা বাবা-মায়ের আকুতির মূল্যই বা কম কীসে? ছেলেকে হারানোর পর তাদের কি হাল হয়েছে কে জানে!
পুলিশের ডায়েরি দেখে হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জকে ফোন করলাম।
– হ্যালো, আমি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমতলী বলছি।
– আস-সালামু আলাইকুম স্যার।
– ওয়ালাইকুমুস-সালাম।
– স্যার, কেমন আছেন?
আমি এই কথার কোনো উত্তর না দিয়ে একবারে কাজের কথায় চলে গেলাম। ওসিকে হাইমচরের প্রত্যেকটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেবদের সাথে কথা বলে রুবেলের হারিয়ে যাওয়া বিষয়ে মাইকিং করার জন্য দিকনির্দেশনা দিলাম। অপেক্ষার প্রহর খুব বেশি দীর্ঘ হলো না। সন্ধ্যার আগেই অফিসার ইনচার্জের ফোন এলো। আমার মনের উত্তেজনা তখন তার মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি ঠিক মতো কথা বলতে পারছেন পারছিলেন না। কোনমতে বললেন, ছেলেটার ঠিকানা পাওয়া গেছে স্যার!
আমার বুকের উপর থেকে পাথর নেমে গেল।
আমি বললাম, “ইমিডিয়েটলি ওর বাবা-মাকে থানায় আনার ব্যবস্থা করুন। ওনারা তাদের ছেলের সাথে ফোনে কথা বলুক। ছেলেটা খুব অস্থির হয়ে গেছে।”
ওসি বললেন, “এখুনি ব্যবস্থা নিচ্ছি স্যার।”
ফোনে বাবা-মায়ের সাথে কথা বলার পর রুবেল অনেকটাই শান্ত হলো। মনে মনে ভাবলাম ছেলেটাকে সেফ হোমে পাঠালে ও হয়তো কোনদিনই ওর বাবা-মাকে ফিরে পেতো না।
পরদিন বিকেলে ওর বাবা-মা আমতলীতে ছেলেকে নিতে এলো। আমি একধরনের ঘোরের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে দিলাম। রুবেলের সাথে ওর বাবা-মায়ের মিলনের আনন্দঘন দৃশ্য আমার মত কঠিন মানুষকেও কাঁদিয়ে ছাড়লো। ওদের বিদায় দেবার পরেও আদালতের বারান্দায় কিছুক্ষণ বজ্রাহতের মতো দাঁড়িয়ে থাকলাম। মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে বললাম, পরম করুণাময় তুমি এভাবেই আমাকে সারাজীবন মানুষের পাশে দাঁড়াবার শক্তি ও সাহস দিও।
সূত্র : বৈজয়ন্ত বিশ্বাস , অতিঃ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর ফেসবুক পেজ থেকে।


শেয়ার করুন
0
FacebookTwitterPinterestEmail
পূর্ববর্তী খবর
গাংনীতে পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধনের অভিযোগ
পরের খবর
সারাদেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে মেহেরপুর বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আরও পড়ুন

গাংনীতে বিএনপি অফিসের সামনে বোমাসদৃশ বস্তু ও হুমকিপত্র উদ্ধার

মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-২

ভুয়া চিকিৎসক সেজে প্রতারণা, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা

মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত

জনপ্রিয় খবর

  • পাঁচ কেজি গাঁজা সহ কুতুবপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার  সোহেল  আটক

  • মেহেরপুরে নৌকা ছেড়ে ট্রাকে উঠার হিরিক

  • মেহেরপুরে এস এস সি ব্যাচ -৯৩ ও ৯৫ এর ইফতার মহাফিল

  • মেহেরপুর পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা

  • মেহেরপুরে শর্মা ফুড প্লাজা রেস্টুরেন্টের শুভ উদ্বোধন

সর্বশেষ

  • গাংনীতে বিএনপি অফিসের সামনে বোমাসদৃশ বস্তু ও হুমকিপত্র উদ্ধার

  • মেহেরপুরে নারী-শিশুসহ ৮ জনপুশ-ইন

  • মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-২

  • মায়ের দাফনে ইউপি চেয়ারম্যান প্যারোলে মুক্ত

  • জাতীয় গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা পথিক চলে গেলেন না ফেরার দেশে

  • ভুয়া চিকিৎসক সেজে প্রতারণা, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা

  • মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত

প্রথম রাজধানী

হোটেল বাজার মোড়, মেহেরপুর।
ফোন: +8801714938647
ইমেইল prothomraj@gmail.com

প্রকাশক ও সম্পাদক

সম্পাদক: মাহবুবুল হক পোলেন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মকিদুর রহমান
বার্তা সম্পাদক: মিজানুর রহমান অপু
ফোন: +8801714938647
ইমেইল: prothomraj@gmail.com

ফেসবুকে ফলো করুন

Facebook
  • Facebook
  • Twitter
  • Instagram

ফোনঃ +৮৮০১৭১৪৯৩৮৬৪৭ | ইমেইলঃ prothomraj@gmail.com

স্বত্ত্বাধিকারী ২০২৩ প্রথম রাজধানী। সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত। কারিগরি সহযোগিতায়ঃ দেশি হোস্টিং।


উপরে ফিরে যান